মানুষের কবিতা: নারী দিবসে আমার চোখে তুমি

নারী দিবসে আমার চোখে তুমি

"নারী দিবসে আমার চোখে তুমি"
             ৮ই মার্চ ২০১৮
তোমার জন্য দিনরাত্রি আর
রাত জেগে দেখি স্বপ্ন।
তোমার জন্য ঘাস ফুল আর
মুঠো ভরে আনি আলো।
তুমি বহতা নদী,
আমি পিপাসার্ত !
ঘুরে ফিরি পেতে তোমার সান্নিধ্য।
সৃজন করি ভাবনা তোমায়,
চেয়ে রই ঘোর লাগা দৃষ্টি
নারী তুমি এক অবাক সৃষ্টি।
নারী তুমি বহমান নদী
তোমার প্রতিটি বাঁকে আমি খুঁজে পাই নতুন জীবন দর্শন।
তুমিই কখনো মা, কখনো মেয়ে, কখনো বোন কিংবা জীবন সঙ্গীনী,
এটা যতটা না বড় বিস্ময় তার থেকেও বিস্ময়কর যখন ভাবি,
একা তুমি কিভাবে পারো এতগুলো চরিত্র অবলীলায় চিত্রায়ন করতে !
কখনো জীবনসাথী হয়ে আদর পরশ বুলিয়ে দাও,
ভালোবেসে সযত্নে লুকিয়ে রাখো আমার যত ভুল।
আমার সব অযাচিত অভিপ্রায় পূর্ণতা পায় তোমার কাছে,
আর কেনই বা পাবে না ? আমি যে তোমার নাড়ি ছেঁড়া ধন।
তোমার আদর ভালোবাসা নিয়েই তো আমার অহংকার, বেড়ে ওঠা।
তোমার আঁচল তলে খুঁজে পাই এক পরম সুখানুভূতি,
সোনা তুমি যেন গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদে হঠাৎ বৃষ্টি।
ভালোবাসি আজও তোমায় খুব...
কিন্তু কখনো বলা হয়নি এ ভালোবাসার তীব্রতা কতো।
আমি তোমার ভালোবাসার কাঙাল,
আজো আমি তোমার এসএমএস, কল পাবার অপেক্ষায় দৌঁড়ে মোবাইল ধরি।
হোয়াটসএপ, ফেসবুক আর মেসেঞ্জার খুলে বসে থাকি, তোমার বার্তা পাবার প্রত্যাশায়।
তোমাকে নিয়ে লিখতে লিখতে দিস্তা কাগজ ফুরাই,
কালি ফুরায় কিন্তু ভাবনার ইতি হয়না ।
সোনা, ১৬ই আগস্ট ২০১৫ এর কথা মনে পড়ে তোমার ?
যেদিন কেঁদে কেঁদে বলেছিলে ভালোবাসি তোমায় !
আজো প্রতিধ্বনিত হয় ভালোবাসার বিনম্র আবদার ।
কখনো বা প্রিয় আদরের সোনা হয়ে খুনসুঁটিতে ভরিয়ে রাখো আমায়,
তোমার সব চাওয়া পূরণ করতে ওষ্ঠাগত আমার প্রাণ।
তবু নিস্বার্থ ঐ চাহুনি আর কোমল হাতের স্পর্শের সাথে ওই আদর মাখা সুরে,
মনা ডাকের কাছে হার মানে সব কষ্টেরা।
তোমার দৃশ্যপনায় বুকের মাঝে অনুভব করি এক অদম্য প্রেম,শান্তি
আবার তুমি আসো, আসো অন্য রূপে।
তোমার জন্য হৃদয় মাঝে লালন করি প্রেম,
তুমি যখন হও ভালোবাসার জুটি আমার ।
তোমার ওই মায়াময় মুখ আর আধো আধো মনা ডাক, আমি জয় করবো বিশ্বভুবন,
তোমার প্রতি পদক্ষেপে আমি বিছিয়ে দিই আমার হৃদয় ।
আমি ভালোবাসি তোমায় সোনা…..
সুতীব্র তুমি আর তোমার উপস্থিতি,
প্রতিটি মুহূর্তকে তুমি করে নাও তোমার।
আমার চারপাশ আমার সত্ত্বা তুমিময়…
জীবনের গতিময়তায় তুমি ছন্দসম।
তোমার সুরেলা কণ্ঠ  স্পর্শ করে আমার হৃদয়।
তোমার গেয়ে যাওয়া গান আমি নীরবে গাই,
আর চোখাশ্রুতে তোমার মনা প্লাবিত হয়।
প্রেমময় তোমার তাড়নায় অনুভব করি বেঁচে থাকাটা...
কখনো বা বন্ধু হয়ে কখনো বা প্রেমিকা আবার কখনো বা জীবনসঙ্গী!
আবার লড়াইয়ের সাথী হয়ে প্রেরণা দিও তুমি ।
আবার কখনো আমার হাতেখড়ি শিখিয়েছো পুস্তক জ্ঞান,
সামলে দিয়েছো জীবন মানেহীন আমায় করেছো মহান।
তুমি চিনিয়েছো সেই পথ যার গন্তব্য-সাফল্য অপেক্ষমান,
তোমার হাত ধরেই আমার বিশ্বজয়ের স্বপ্ন।
তুমি অর্ধাঙ্গিনী আমার,
আমার মনের ঘরের পুরোটা জুড়ে তোমার অস্তিত্ব।
আমার মনের খোরাক তুমি,
অন্ধকারময় আমার মাঝে তুমি একরাশ আলোকছটা।
নির্দ্বিধায় আমি স্বীকার করে নিই,
আমার মাঝে আমার আমিটা যতটুকু তুমি ঠিক ততটুকু।
বেশি বৈকি কম নয়…..
কিন্তু এ সমাজ কলুষতা, ধর্মান্ধতা আর অত্যাচারীর চাঁদরে মোড়া এক বিভীষিকার নাম ভালোবাসা !
এর লোভাতুর চোখে তুমি ক্ষতবিক্ষত হও,
ওদের পাষাণপ্রাণ কেঁপে ওঠে না...
আমি ও ভুলুন্ঠিত হয়ে পড়তাম হয়তো !
সমাজে ভালোবাসার ছলনা করে কতিপয় নরপশু,
যখন ওই শরীরটাকে খুবলে খায়, সমাজ তখন নির্বিঘ্নে নিদ্রা যায়, প্রগতিশীলতা থমকে দাঁড়ায়।
নতুবা আয়েশ করে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে নারীর পরাজয়…
শুধু যৌনতা উপভোগ করার জন্যই ওরা নিকটে বিরাজমান।
ওরা বারবার করবে নারীকে অপদস্ত...
সুযোগ খুঁজবে কলঙ্ক আঁকনের, করতে চাইবে বিনোদনের খোরাক।
কিন্তু ওরা জানে না এ যে শুধু নারীর নয়, বিবেকের পরাজয় !
মনুষত্বের গুমড়ে কেঁদে ওঠা, সময়ের বুকে মানুষের পশুত্ব বরণ।
তুমি শিখিয়েছো ভালোবাসার অনুভূতি উপলব্দি,
নিজের কাছে টেনে নিয়েছিলে সেদিন, সমাজের চোখে ধূলো দিয়ে।
আমি আজো সেই ভালোবাসার অনুভূতি উপলব্দি করি।
সমস্ত রকম বাঁধাকে পরাজিত করে,
চলো আমরা আবার নতুন করে গড়ে তুলি, আমাদের স্বপ্নকে করি সাকার।
যা কিছু অগঠনমূলক, বিনাশকারী নেতিবাচক তাকে পেছনে ফেলে...
নতুন দিগন্তে হাতে হাত পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটি।
এ এক নতুন লড়াইয়ের শপথ নারী দিবসে !
তুমি যত বেশি পরনির্ভরশীলতায় এগুচ্ছো
ততই আমাদের জীবনে সংযোজিত হচ্ছে অন্ধকার !
স্বাধীন চিন্তার দমন করে,
তোমার নিরাপত্তা, সুখের কথা বলে, সুন্দর ভবিষ্যতের দোহাই দিয়ে,
তোমার ভালোবাসাকে শেষ করতে চাইছে।
যতদিন তুমি স্বাধীন ছিলে, নিজের ভালো মন্দ নিজে বিচার করতে...
ততদিন আমাদের সম্পর্ক সুন্দর ছিল আকর্ষণীয় ছিল,
আর ভাঙা গড়া নিয়েই তো সমাজ-সম্পর্ক !
চন্ডিদাস-রজকিনী, অনারকলিরা আজো বেঁচে আছে মানুষের মননে-ইতিহাসে…ত্যাগ তিতিক্ষায়।
জমিদারবাড়ির জেনি নিঃস্ব মার্ক্সের প্রেমে বাড়ি ছেড়েছিল,
একবিংশ শতকেও এঁরা প্রাসঙ্গিক…
আমরা বার বার ভালোবাসার টানে ফিরেছি,
একজন আরেকজনের কাছে ছুটে গিয়েছি।
কিন্তু আজ কারা পিছনে ছুরি মারছে?
তুমি বিচারের দাবিতে যখন চিৎকার করবে,
ওরা মুখ লুকাবে মুখোশের আড়ালে একদিন।
সেদিন সময় সংকীর্ণতায় সব হারিয়ে যাবে হয়তো !
সোনা আমি তোমার অপেক্ষায় দিনগুনছি,
তুমি কখনো ভেঙে পরোনা
অধৈর্য হয়ে বিপাকে পরোনা ।
আমি তোমার প্রতি পদে আছি, আপাদমস্তক বিরাজমান।
আমি তোমার বিরহে অটল থাকবো,
তুমি ফিরে এসো নতুন প্রভাতের অপেক্ষায় প্রহর গুনছি।

ক । দ ।


No comments: